"জেনে রাখ, দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছুই অভিশপ্ত। কিন্তু আল্লাহ তা'আলার যিকর ও তিনি যা পছন্দ করেন এবং জ্ঞানী ও জ্ঞানার্জনকারী (অভিশপ্ত নয়)"। [তিরমিজি]
** রিয়াদুস সলিহীন - ৪৭৮
সহীহ ও গুরুত্বপূর্ণ হাদিস সংবলিত এবং বিশ্বের অসংখ্য ভাষায় বহুল প্রচারিত গ্রন্থ 'রিয়াদুস সালেহীন'
"জেনে রাখ, দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছুই অভিশপ্ত। কিন্তু আল্লাহ তা'আলার যিকর ও তিনি যা পছন্দ করেন এবং জ্ঞানী ও জ্ঞানার্জনকারী (অভিশপ্ত নয়)"। [তিরমিজি]
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণ তাঁর কাছে দুনিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তোমরা কি শুনছো না, তোমরা কি শুনছো না? আরাম-আয়েশ ও বিলাসিতা ত্যাগ করা ঈমানের লক্ষণ, আরাম-আয়েশ ও বিলাসিতা ত্যাগ করা ঈমানের নিদর্শন অর্থাৎ সাদাসিধা ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন)"। [আবু দাউদ]
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জামার আস্তিন ছিলো কব্জি পর্যন্ত।” [আবু দাউদ, তিরমিযি]
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চামড়ার একটা বিছানা ছিলো, এর ভেতরে ভরা ছিলো খেজুরের ছাল।” [বুখারী]
“তোমরা সহজ নীতি ও আচরণ অবলম্বন করো, কঠোর নীতি অবলম্বন করো না। সুসংবাদ শুনাতে থাকো এবং পরস্পর ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িও না।” [বুখারী ও মুসলিম]
“পুণ্য ও সততা সচ্চরিত্রেরই অপর নাম। গুনাহ হলো সেই জিনিস যা তোমার অন্তরে সন্দেহ সৃষ্টি করে এবং লোকে জেনে ফেলুক তা তুমি অপছন্দ করো।” [মুসলিম]
“হে আবদুর রহমান ইবনে সামুরা! নেতৃত্বপ্রার্থী হয়ো না। কারণ প্রার্থী না হয়ে নেতৃত্ব প্রাপ্ত হলে তুমি এ ব্যাপারে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। পক্ষান্তরে প্রার্থী হয়ে নেতৃত্ব লাভ করলে তোমার উপরেই যাবতীয় দ্বায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে। তুমি কোন বিষয়ে শপথ করার পর তার বিপরীতে কল্যাণ লক্ষ্য করলে তখন যেটা ভালো সেটাই করবে এবং শপথের কাফফারা আদায় করবে।” [বুখারী ও মুসলিম]
"তিনটি জিনিস মৃতের পেছনে পেছনে (কবর পর্যন্ত) যায়ঃ তার পরিজন, তার ধন-সম্পদ ও তার আমল (নেক বা বদ)। অতঃপর দু'টি ফিরে আসে এবং একটি (তার সাথে) থেকে যায়। তার পরিজন ও সম্পদ ফিরে আসে এবং তার আমল তার সাথে থেকে যায়।" [বুখারী ও মুসলিম]
"ঈমানের ৭০-এর কিছু বেশি অথবা ৬০-এর কিছু বেশি শাখা-প্রশাখা আছে। তন্মধ্যে উত্তম হচ্ছে "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলা, আর নিম্নতম হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জাও ঈমানের একটি শাখা।" [বুখারী ও মুসলিম]
"আমি এক ব্যক্তিকে দেখতে পেয়েছি, যে জান্নাতে এ জন্য চলাফেরা করছে যে, সে একটা পথের উপর থেকে একটা গাছ কেটে ফেলে দিয়েছিলো। এটা মুসলিমদেরকে কষ্ট দিচ্ছিলো।" [মুসলিম]
"সম্পদ ও আভিজাত্যের প্রতি মানুষের লোভ তার দ্বীনের যে মারত্মক ক্ষতি করে, বকরীর পালে ছেড়ে দেয়া দু'টি ক্ষুধার্ত নেকড়েও বকরীর পালের ততো ক্ষতি করতে পারেনা।" [তিরমিযি]
"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের পূর্ব পর্যন্ত তার পরিবার কোনদিন একনাগাড়ে দু'দিন পেটপুরে যবের রুটিও খেতে পায়নি।" [বুখারী ও মুসলিম]
অপর এক বর্ণনায় আছেঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদীনা আসার পর থেকে তার ইন্তিকাল পর্যন্ত তার পরিবারের লোকজন একনাগাড়ে তিনদিন পেট ভরে গমের রুটিও খেতে পায়নি।
"তোমাদের কেউ তার পছন্দনীয় স্বপ্ন দেখলে সেটা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে। তার জন্য আল্লাহর প্রশংসা করা এবং (বন্ধুদের) কাছে তা বিবৃত করা উচিত। অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ তখন সে যাকে ভালোবাসে তাকে ছাড়া আর কাউকে সেটা না বলা উচিত। আর সে যদি অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখে তাহলে এটা হয় শয়তানের পক্ষ থেকে। তার ক্ষতি থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া এবং কারো কাছে তা বর্ণনা না করা উচিত। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। " [বুখারী ও মুসলিম]
"দ্বীন (ইসলামের মূল কথা) হচ্ছে জনগণের কল্যাণ কামনা করা। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, কার জন্য? তিনি বললেনঃ মহান আল্লাহ তাঁর কিতাব, তার রাসূল, মুসলমানদের, ইমাম (নেতা) এবং সমস্ত মুসলমানদের জন্য।" [মুসলিম]
"এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সে না তার উপর যুলুম করতে পারে আর না তাকে শত্রুর হাতে সোপর্দ করতে পারে। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট হয়, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের কোন কষ্ট বা অসুবিধা দূর করে দেয়, এর বিনিময়ে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার কষ্ট ও বিপদ থেকে অংশবিশেষ দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন।" [বুখারী ও মুসলিম]
"আল্লাহ তা'আলা পিতামাতাকে কষ্ট দেয়া, কৃপণতা করা, অবৈধভাবে অন্যের মাল দাবী করা এবং কন্যা সন্তানের জীবন্ত প্রোথিত করা তোমাদের প্রতি হারাম করে দিয়েছেন। নিরর্থক ও অপ্রয়োজনীয় কথা বলা, অধিক চাওয়া এবং সম্পদ বিনষ্ট করা তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন।" [বুখারী ও মুসলিম]
"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানের ইজ্জত করে আদর-আপ্যায়ন করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে, অথবা নীরব থাকে।" [বুখারী ও মুসলিম]
"আমার কাছ থেকে মেয়েদের সাথে সদ্ব্যবহার করার শিক্ষা গ্রহণ কর। কেননা নারী জাতিকে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। পাঁজরের হাড়গুলোর মধ্যে ওপরের হাড়টা সর্বাপেক্ষা বাঁকা। অতএব তুমি যদি সোজা করতে যাও, তবে ভেঙ্গে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যদি ফেলে রাখ তবে বাঁকা হতেই থাকবে। অতএব, নারীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। " [বুখারী ও মুসলিম]
"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন কাজ (ইবাদত) করার ঐকান্তিক আগ্রহ থাকা সত্বেও তা পরিত্যাগ করতেন এই ভয়ে যে, লোকেরা (তার দেখাদেখি) তা নিয়মিত করতে থাকবে। ফলে এটা তাদের ওপর ফরয করে দেয়া হবে।" [বুখারী ও মুসলিম]
"কতিপয় আরব বেদুইন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এল। তারা জিজ্ঞেস করলো, আপনারা কি আপনাদের ছোট্ট শিশুদের চুমু খান? তিনি বললেনঃ হাঁ। তারা বললো, আল্লাহর কসম! আমরা কিন্তু চুমু দেইনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমি কি এর মালিক বা জিম্মাদার হতে পারি, যদি মহান আল্লাহ তোমাদের অন্তর থেকে রহমত ও অনুগ্রহকে তুলে নিয়ে নেন?" [বুখারী ও মুসলিম]
"কোন ব্যক্তির ওপর তার অপর ভাইয়ের যদি কোন দাবী থাকে, তা যদি তার মান-ইজ্জতের ওপর অথবা অন্য কিছুর ওপর যুলুম সম্পর্কিত হয়, তবে সে যেন আজই কপর্দকহীন নিঃস্ব হওয়ার পূর্বে তার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে নেয়। অন্যথায় (কিয়ামতের দিন) তার যুলুমের সমপরিমাণ নেকী তার কাছ থেকে নিয়ে নেয়া হবে। যদি তার কোন নেকী না থাকে তবে তার প্রতিপক্ষের গুনাহ থেকে (যুলুমের সমপরিমাণ) তার হিসাবের অন্তর্ভুক্ত করে দেয়া হবে।" [বুখারী]
"নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন বলবেনঃ ওহে! যারা আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করেছিলে, আজ আমি তাদের সুশীতল ছায়াতলে স্থান দেব। আর এদিনে আমার ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়াই নেই।" [বুখারী ও মুসলিম]
"ঈমানদাররাই তাদের (আনসারদের) ভালোবাসেন, আর মুনাফিকরাই তাদের ঈর্ষা করে। যে ব্যক্তি তাদের ভালোবাসে, মহান আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন, আর যে ব্যক্তি তাদের ঈর্ষা করে, বা দুশমনী রাখে আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন।" [বুখারী ও মুসলিম]
"সৎ সহকর্মী ও পাপী সহযোগীর দৃষ্টান্ত হলোঃ একজন কস্তুরীর ব্যবসায়ী, অপরজন হাপর চালনাকারী (কামার)। কস্তরীর ব্যবসায়ী হয় তোমাকে বিনামূল্যে কস্তরী দেবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে তা কিনে নেবে। যদি এর দু'টোর একটিও না হয়, তবে অন্তত তুমি তার কাছে এর সুঘ্রাণ পাবে। আর হাপর চালনাকারী হয় তোমার কাপড় পুড়িয়ে দিবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে দুর্গন্ধ পাবে।" [বুখারী ও মুসলিম]
"চারটি বিষয়কে সামনে রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা যেতে পারেঃ তার ধন সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার ধর্মপরায়নতা। এক্ষেত্রে ধর্মপরায়ন স্ত্রী লাভে বিজয়ী হও, তোমার হাত কল্যাণে ভরে যাবে।" [বুখারী ও মুসলিম]
"তোমাদের কেউই পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ না করবে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।" [বুখারী ও মুসলিম]
"যে ব্যক্তির চরিত্র এবং ব্যবহার সবচেয়ে উত্তম ঈমানের দিক থেকে সে-ই পরিপূর্ণ মুমিন। তোমাদের মধ্যে সেইসব লোক সবচেয়ে ভালো যারা তাদের স্ত্রীদের জন্য ভালো।" [তিরমিযি]
"সমগ্র পৃথিবীটাই সম্পদে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে কল্যাণকর ও উত্তম সম্পদ হল চরিত্রবান নেককার স্ত্রী।" [মুসলিম]
"আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কোন ব্যক্তির ওপর তার স্ত্রীর কি অধিকার রয়েছে?
তিনি বললেনঃ তুমি যখন আহার কর তাকেও আহার করাও, তুমি যখন পরিধান কর, তাকেও পরিধান করাও, কখনও চেহারা বা মুখমন্ডলে প্রহার করো না, কখনো অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ো না এবং ঘরের মধ্যে ছাড়া তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।" [আবু দাউদ]
"কোন মুসলমান পুরুষ যেন কোন মুসলমান মহিলার প্রতি হিংষা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ না করে, কেননা তার কোন একটি দিক তার কাছে খারাপ লাগলেও অন্য একটি দিক তার পছন্দ হবে। অথবা তিনি (নবী) অনুরূপ কথা বলেছেন।" [মুসলিম]
"আমি নবী রাসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম,কোন কাজটি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়।তিনি বললেনঃ ঠিক সময়ে নামায পড়া।আমি আবার বললাম, অতঃপর কোনটি?তিনি বললেনঃ পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা।আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, অতঃপর কোন কাজটি।তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।"
[বুখারী ও মুসলিম]
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের জীবনে বিশ্বাসী সে যেন হয় ভালো কথা বলে, অন্যথায় চুপ থাকে।” [বুখারী ও মুসলিম]
“আল্লাহ অবশ্যই তার বান্দার প্রতি এ জন্য সন্তুষ্ট হন যে, সে কোন কিছু খেয়ে তাঁর প্রশংসা করে অথবা কোন কিছু পান করে তাঁর প্রশংসা করে।” [মুসলিম]
“আল্লাহর দ্বীন সহজ। যে কোন ব্যক্তি এ দ্বীনকে কঠিন বানাবে তার ওপর তা চেপে বসবে। কাজেই মধ্যম ও ভারসাম্যপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করো। আর সুখবর গ্রহণ করো এবং সকাল, সন্ধ্যায় ও শেষ রাতের কিছু অংশে ইবাদাত করে আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করো।” [বুখারী]
“অযথা কঠোরতা অবলম্বনকারীরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে”। [মুসলিম]
“তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতের প্রবেশ করতে পারবে না এবং পরস্পরকে না ভালোবাসা পর্যন্ত তোমাদের ঈমান পূর্ণতা লাভ করবে না।
আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজের কথা বলবো না, যা করলে তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে?
তোমরা নিজেদের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রচলন করো। “ [মুসলিম]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে সাতটি বিষয়ের হুকুম দিয়েছেনঃ[বুখারী ও মুসলিম]
১) রোগীকে দেখতে যাওয়া
২) জানাযায় শরীক হওয়া
৩) হাঁচি দানকারীর আলহামদুলিল্লাহ বলার জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা
৪) দুর্বল ও বৃদ্ধকে সাহায্য করা
৫) মাযলুমকে সহায়তা করা
৬) সালামের প্রচলন করা
৭) শপথ পূর্ণ করা
“হে লোকেরা, সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটাও, অভুক্তদের আহার করাও, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার কর এবং যখন লোকেরা ঘুমিয়ে থাকে তখন নামায পড়। তাহলে তোমরা শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। [তিরমিযী]
"”রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন কথা বলতেন, খুব স্পষ্ট ও পরিষ্কার করে বলতেন। শ্রোতাদের সবাই তা হৃদয়াঙ্গম করে নিতে পারতো।” [আবু দাউদ]
"আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কখনো অট্টহাসি দিতে দেখিনি যাতে তাঁর মুখ গহবর প্রকাশ পায়। তিনি সাধারণত মুচকি হাসি দিতেন।" [বুখারী, মুসলিম]
"যার হাতে আমার প্রাণ সেই সত্ত্বার কসম করে বলছিঃ তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে যেতে পারবে না, আর পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন না করা পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজের কথা বলে দেবো না যা করলে তোমরা পরস্পর ভালোবাসতে পারবে? (তা হলো) তোমরা পরস্পর সালাম প্রথা চালু করো"। [মুসলিম]
রাসুলে আকরাম (সা) জুম'আর (ফরজ) নামাজের পর বাসায় ফিরে যেতেন এবং বাসায় দুই রাকায়াত সুন্নত নামাজ আদায় করতেন [মুসলিম]
"যখন তোমাদের কেউ জুম'আর নামায আদায় করল তখন সে যেন তারপর চার রাকায়াত সুন্নত নামায পড়ে" [মুসলিম]
"কোন সৎকাজকে অবজ্ঞা করো না, যদিও তা তোমার ভাই এর সাথে হাসিমুখে সাক্ষাত করার কাজ হয়।" [মুসলিম]
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
"দোযখকে লোভনীয় জিনিস দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়েছে। আর জান্নাতকে দুঃখ-কষ্টের আড়ালে রাখা হয়েছে।" [বুখারী ও মুসলিম]
কিয়ামাতের দিন মুমিন ব্যক্তিকে তার রবের কাছে নিয়ে আসা হবে, এমনকি তিনি তাকে তার রহমতের পর্দায় ঢেকে রাখবেন। অতঃপর তিনি তাকে তার সমস্ত গুনাহর কথা স্বীকার করাবেন এবং বলবেনঃ তুমি কি এই গুনাহ চিনতে পারছো, তুমি কি এই গুনাহ চিনতে পারছো? সে বলবে, হে আমার রব! আমি চিনতে পারছি। তিনি বলবেন, দুনিয়ায় আমি এটা তোমার পক্ষ থেকে ঢেকে রেখেছিলাম, আর আজ এটা তোমাকে মাফ করে দিচ্ছি। অতঃপর তাকে সৎ কাজসমূহের একটি আমলনামা দান করা হবে। [বুখারী ও মুসলিম]
সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমরা যদি গুনাহ না করতে, তাহলে আল্লাহ তোমাদের তুলে নিয়ে যেতেন এবং তোমাদের জায়গায় এমন জাতিকে আনতেন, যারা গুনাহ করে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতো, অতঃপর আল্লাহ তাদের মাফ করে দিতেন”। [মুসলিম]
মহান আল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি একটি সৎ কাজ করবে, সে এর দশগুণ অথবা অধিক সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি একটি অন্যায় করবে, সে তেমনি একটি অন্যায়ের শাস্তি পাবে অথবা আমি মাফ করে দেবো। যে ব্যক্তি আমার এক বিঘত নিকটবর্তী হবে, আমি তার এক হাত নিকটবর্তী হবো; যে ব্যক্তি আমার এক হাত নিকটবর্তী হবে, আমি তার দুই হাত নিকটবর্তী হবো। যে ব্যক্তি হেঁটে হেঁটে আমার দিকে আসবে আমি দৌড়ে তার দিকে যাবো। যে ব্যক্তি পৃথিবী সমান গুনাহ নিয়ে আমার সাথে সাক্ষাত করবে, অথচ যে আমার সাথে কোন কিছু শরীক করেনি, আমি তার সাথে অনুরূপ (পৃথিবীভর্তি) ক্ষমা নিয়ে সাক্ষাত করবো। [মুসলিম]
“এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কোন কাজ বলে দিন, যখন আমি তা করবো তখন আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষও আমাকে ভালোবাসবে। তিনি বলেন, তুমি দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত হও, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষের কাছে যা আছে, তার প্রতিও অনাসক্ত হও তাহলে মানুষও তোমাকে ভালোবাসবে।” [ইবনে মাজাহ]